আব্দুল খালেক :-
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার জিয়ানগর এলাকায় ‘বাউ-ডাক’ জাতের হাঁস পালন করে সফল হয়েছেন নারী উদ্যোক্তা রিনা বেগমসহ আরও অনেকে। আগের তুলনায় কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এই জাতের হাঁস পালনকে ঘিরে স্থানীয়দের আগ্রহ বাড়ছে।
গত পাঁচ বছর ধরে পারিবারিকভাবে দেশি হাঁস পালন করছিলেন রিনা বেগম। তবে মৃত্যুহার বেশি হওয়ায় লাভের মুখ দেখা যাচ্ছিল না। পরে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আইডিএফ-এর সহযোগিতায় নতুন জাতের ‘বাউ-ডাক’ হাঁস পালন শুরু করেন তিনি।
রিনা বেগম জানান, “আগে হাঁস পালনে যা আয় হতো, তাতে সংসার চালানো কঠিন ছিল। এখন বাউ-ডাক হাঁস ১০-১২ সপ্তাহেই ২-২.৫ কেজি ওজনের হয়। বছরে ডিম দেয় ২২০ থেকে ২৩০টি। দেশি হাঁসের তুলনায় এতে লাভ অনেক বেশি।”
তিনি আরও জানান, গেল বছর আইডিএফের সহায়তায় প্রথমবারের মতো ৫০টি হাঁসের বাচ্চা দিয়ে খামার শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে রয়েছে শতাধিক হাঁস। তার সাফল্য দেখে স্থানীয় আরও ১২ জন উদ্যোক্তা বাউ-ডাক হাঁস পালন শুরু করেছেন।
একই এলাকার খামারি মাহাবুব হোসেন জানান, “দেশি হাঁসের পাশাপাশি ৫০টি বাউ-ডাক হাঁস পালন শুরু করি। অন্যান্য হাঁসের তুলনায় এ জাতের মাংস ও ডিম উৎপাদন অনেক বেশি। এখন বাণিজ্যিকভাবে খামার বড় করার পরিকল্পনা করছি।”
আইডিএফ-এর প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকিরুল ইসলাম জানান, পিকেএসএফ-এর অর্থায়নে মাটিরাঙ্গা উপজেলার ১৩ জন খামারিকে বাউ-ডাক হাঁসের প্রদর্শনী খামার দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ জনকে মাংস উৎপাদনের জন্য ৫০টি করে এবং দুইজনকে ডিম উৎপাদনের জন্য ২৪০টি হাঁসের বাচ্চা দেওয়া হয়। এ জাতের হাঁস দ্রুত বেড়ে ওঠে, রোগবালাই কম এবং স্থানীয় আবহাওয়ায় ভালোভাবে টিকে থাকে।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুমেন চাকমা জানান, “বাউ-ডাক হাঁস দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম। ওজন দ্রুত বাড়ে, রোগবালাই কম, ডিম উৎপাদনও বেশি— সব মিলিয়ে এটি খামারিদের জন্য লাভজনক একটি জাত।”
এদিকে, রিনা বেগম ও মাহাবুব হোসেনদের সফলতা দেখে মাটিরাঙ্গা উপজেলার আরও অনেক খামারি ‘বাউ-ডাক’ হাঁস পালনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।