নিজস্ব প্রতিবেদক :-
‘সমবায়ে গড়ব দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে ৫৩ তম জাতীয় সমবায় দিবস পালিত।
২ রা নভেম্বর, শনিবার সকাল ১১ টায় উপজেলা প্রশাসন ও সমবায় বিভাগ এর আয়োজনে উপজেলা চত্তরে সমবায় র্যালী, জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) ফারজানা ববি মিতু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টঙ্গীবাড়ী থানা অফিসার ইনচার্জ মো: মহিদুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন উপজেলা সমবায় অফিসার মিজানুর আহসান চৌধুরী।
এসময় সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন টঙ্গীবাড়ী প্রেসক্লাব সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, ক্রিয়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোঃ নাজমুল ইসলাম পিন্টু, সদস্য কাদির খান, সমবায় কর্মকর্তা কর্মচারীগণ, শিক্ষক, ছাত্র সহ সমবায় সমিতির এর গ্রাহকরাও উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বক্তব্যে টংগিবাড়ী প্রেসক্লাব সভাপতি অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় এ সমবায়ের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। দ্রব্যমুল্যের বাজারে সমবায়ের ভূমিকা অপরিশীম। ১৮শতকের শুরুতে ইংল্যান্ড একটি গ্রাম থেকে এ সমবায়ের কার্যক্রম শুরু হয়। ধীরে ধীরে এ সমবায়ের কার্যক্রম সারা পৃথিবী ব্যাপি হয়েছ। আমাদের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই এ সমবায়ের সমিতি রয়েছে।
একটা পয়সা যদি সোজা করে রাখি, একটা পাশ আলোকিত হবে অন্য একটা পাশ অন্ধকার দেখা যাবে। আমাদের সমাজে যেমন সমবায়ের উপকারিতা রয়েছে, এই সমবায়কে পুজি করেই একটা পক্ষ রয়েছে যারা সুবিধা নিয়েছে। যার কারণে এ সমবায়ের প্রতি মানুষ আস্থা হাড়িয়ে ফেলেছে। যারা সমবায়ের নিবন্ধন নিয়ে সুদের ব্যবসা করবে তারা দ্রুত সময় একটা নিবন্ধন পেয়ে যায়। তারা সমাজে মিশে যায়।
সমবায়ের প্রতি মানুষের আস্থা আছে তারা, টাকা রাখে তৃণমুল মানুষ। আর কিছুদিন পরে আমাদের নিউজ করতে হয় কোটি টাকা মেরে চলে গেছে ওমুক মাল্টিপারপাস। ইতিমধ্যে আমরা দেখেছি ফেমাস মাল্টিপারপাস ফজুশাহ্ বাজার থেকে কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। আবার শুনতেছি বালিগাঁও থেকে একটি গ্রাহকের টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে। যারা নিবন্ধন নেয় এবং নিবন্ধন দেয় তারা আইনের ফাক দিয়ে চলে যায়। আর ভুক্তভোগী হয় যারা কি না এ সমবায় সমিতির সদস্য হয় তারা। আমাদের আরো সচেতন হতে হবে।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) ফারজানা ববি মিতু বলেন, সমবায় নীতির মুল কথা হচ্ছে একতা, আমরা একদম ছোটবেলা থেকে কিন্তু একটা গল্প জানি যে, এক বৃদ্ধ লোক তার ৫জন ছেলে ছিল, ৫জন ছেলেই সব সময় ঝগড়া বিবাদ করতো, মারামারি করতো। কারো সাথে কারো মিল ছিল না। তো ওই বৃদ্ধ যখন মৃত্যু শয্যায় তখন সে তার ৫ ছেলেকে ডাকলো, ডেকে সবাইকে একটা-একটা লাঠি দিল, যে আমার সামনে তোমরা দেখি এটা ভাঙতে পারো কি না। সবাই কিন্তু একবারেই এটা ভেঙে ফেললো।
এই বৃদ্ধ যখন বললো ৫টা লাঠি এক সাথে করো। এক সাথে করে এখন তোমরা ভাঙো। তখন কিন্তু কেউ ভাঙতে পারলো না। তো আমি করি যে সমবায় নীতির মুল শক্তিটাই হচ্ছে একতা। আমরা যেকোনো ভালো কাজে যদি একতা বদ্ধ থাকি তাহলে বিজয় সু-নিশ্চিত। আমরা আসলে অনেক ভাবে সেবা দেওয়ার চেস্টা করছি সরকারী ভাবে, বিভিন্ন যে ডিপার্টমেন্টগুলো।
কিন্তু সমস্যা হলো সবাই দিচ্ছে। এর কোনো ডাটা বেইজ নেই। যেমন আমি কতজনকে সেবা দিলাম, কতজন সেই সেবাটা কাজে লাগিয়ে সে লাভবান হলো সেই তথ্য কিন্তু আমাদের কাছে নেই। আমরা কিন্তু উপজেলা লেভেলের কিন্তু অফিসার। আমি বলব সেন্ট্রালি আমাদের আরো অনেক কিছু করার আছে। উপজেলা থেকে আমাদের কি সুবিধা-অসুবিধা সেটা যদি আমরা না বলি, সেন্ট্রালি সেটা ঠিক করতে পারবে না।
আমার মনে হয় আসলে আপনাদের কথা বলতে হবে, আমরা এই এ সমস্যার মধ্যে আছি। উপজেলা সমবায় অফিসারকে জানাতে হবে যে আমাদের এই এ অসুবিধা হচ্ছে। যদি আপনারা আপনাদের অসুবিধাটা এখানে জানান, আমরা আবার সেটা উপরে জানাতে পারব। তো সরকারের যেকোনো প্রজেক্টের পেছনে একটা সৎ উদ্দেশ্য থাকে। সৎ উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণের সেবা করা। জনগণ যাতে উপকৃত হয়।