আল-আমিন স্টাফ রিপোর্টার :-
শেরপুর জেলার সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের খাজা বদরুদ্দোজা হায়দার ওরফে দোজা পীরের দরবারে (মুর্শিদপুর পীরের দরবার) ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার ভোরে হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীদের প্রতিরোধ করতে গেলে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৩ জন আহত হয়েছেন। হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- শেরপুর জেলার সদর উপজেলার দহরিয়াপাড় গ্রামে উসমান মিয়ার ছেলে জয়নাল (৩২), নালিতাবাড়ী উপজেলার সন্ন্যাসীভিটা গ্রামের আয়াতুল্ল্যাহ ছেলে মামুন (১৭), সদর উপজেলার সাতপাকিয়া গ্রামের রমজান মিয়ার ছেলে শহীদ (৩৫), লছমনপুর গ্রামের ছামিদুলের ছেলে মজনু (২৬), বয়ড়াপরানপুর গ্রামের সামউদ্দিনের ছেলে এনামুল হক (৩৫), লছমনপুর ঝাউয়েরচর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে আসিফ (১৬), কান্দা শেরীরচর ইদু মিয়ার ছেলে হাফেজ (৩৯), বলাইয়েরচর গ্রামের মঞ্জিলের ছেলে জিসান (২২)।
তাদের মধ্যে হাফেজ ও জয়নাল গুরুতর আহত হয়। পরে হাফেজকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোরে হাফেজ মারা যায়।
পুলিশ, লিখিত অভিযোগ ও দরবার শরিফ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষক ও এলাকাবাসী সদর উপজেলার লছমনপুর এলাকায় অবস্থিত মুর্শিদপুর দরবার শরিফের কার্যক্রম বন্ধের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, পীরের দরবারে ইসলাম পরিপন্থী কার্যকলাপ পরিচালিত হয়।
ভোরে মাদ্রাসাশিক্ষক মো. তরিকুল ইসলামসহ ৪০০/৫০০ জন মানুষ মুর্শিদপুর পীরের দরবারে হামলা চালান। তাঁরা দরবারের টিনের বেড়া ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালান। এসময় দরবারে থাকা খাদেম ও অন্য মুরিদরা তাঁদের বাধা দিলে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৩ জন আহত হন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এঘটনায় দরবার শরিফের খাদেম মাহমুদান মাসুদ বাদী হয়ে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সুপারসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪০০/৫০০ জনকে আসামি করে মঙ্গলবার বিকেলে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছে। অপরদিকে মাদ্রাসার পক্ষ থেকে দরবার শরিফের লোকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে।
শেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জুবায়দুল আলম বলেন, এ ঘটনায় মুর্শিদপুর দরবার শরিফের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ আট জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ পুরো ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখছে। পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।