টুটুল তালুকদার, গাজীপুর : –
গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান হোসেন শিশিরের বিরুদ্ধে উঠেছে ভয়াবহ অভিযোগ। সম্প্রতি একটি ভিডিওতে এক তরুণী তাকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও গর্ভপাতের অভিযোগ তুলেছেন, যা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ঘটনা সামনে আসার পর, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তড়িৎ পদক্ষেপ নিয়ে শিশিরকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করেছে। কিন্তু, শিশির নিজেই এই অভিযোগকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দাবি করেছেন।
গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান হোসেন শিশিরকে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগের ভিত্তিতে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রবিবার (১৩ অক্টোবর, ২০২৪) রাতে ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় যে, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইমরান হোসেন শিশিরের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পরই তাকে পদ থেকে সরানো হয়। এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। অভিযুক্ত ইমরান হোসেন শিশির কাপাসিয়া উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের সাফাইশ্রী গ্রামের বাসিন্দা।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন একটি ইউটিউব ভিডিওতে একজন ২৭ বছর বয়সী তরুণী শিশিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন। তিনি দাবি করেন, বিয়ের প্রলোভনে শিশির তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়েছেন এবং গর্ভবতী হয়ে পড়লে ভয়ভীতি দেখিয়ে গর্ভপাত ঘটানোর জন্য চাপ দেন। ভিডিওতে তরুণী জানান, তাদের সম্পর্ক শুরু হয় ৬ বছর আগে যখন ইমরান হোসেন শিশির কাপাসিয়া ছাত্রদলের আহ্বায়ক ছিলেন এবং তিনি কাপাসিয়া ডিগ্রী কলেজের ছাত্রী ছিলেন। প্রেমের সম্পর্কের সুবাদে শিশির তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান এবং শারীরিক সম্পর্ক করেন।
তরুণী আরও দাবি করেন যে, শিশির তাকে বলেছিলেন ছাত্রদলের পদে থাকাকালীন বিয়ে করলে তার সাংগঠনিক ভূমিকা নষ্ট হবে। তাই কমিটির মেয়াদ শেষ হলে তিনি তাকে বিয়ে করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে শিশির তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিষয়টি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের জানালে শিশির তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। পাশাপাশি, শিশিরের আগে থেকেই বিবাহিত ছিলেন বলে তিনি জানতে পারেন।
অভিযোগের ব্যাপারে ইমরান হোসেন শিশির বলেন, “আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কিছু দলীয় ষড়যন্ত্রকারী ওই নারীকে প্রভাবিত করেছে। তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনতে তাকে চাপ দেয়। পরে ওই নারী নিজেই ফেসবুকে স্বীকার করেছেন যে, তার অভিযোগ ভিত্তিহীন। এসব অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।