পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি :-
গ্রামীণ জনপদে সেবার এক অনন্য রংপুরের পীরগাছায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এ উপজেলার বেশিরভাগ সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র কেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সার্বিক অবকাঠামোর সৌন্দর্য বৃদ্ধি, নিয়ম শৃঙ্খলার উন্নতি ও সেবার মানে ইতোমধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে হাসপাতালটির সেবা নিয়েও এলাকার মানুষ সন্তুষ্ট। জানা গেছে, ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে মোট -১৮ জন চিকিৎসকের মধ্যে ০৪ জন কনসালটেন্ট ও ২৫ জন নার্স নিয়মিত সেবা দিচ্ছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রতিদিন ৫০০ -৬০০ জন রোগী সেবা নিচ্ছেন। জরুরী বিভাগে প্রতিদিন ১০০-১৫০ জন রোগী সেবা নিয়ে থাকে। প্রতিমাসে প্রায় ০১-০৮ জন গর্ভবতী মায়ের নরমাল ডেলিভারি করা হয়। সিজারিয়ান ডেলিভারি করা হয় ০১-০৩ জনকে। এ ছাড়াও জরুরী প্রয়োজন বিবেচনায় ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ডেলিভারী ব্যবস্থা চালু রয়েছে। নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে সিসি ক্যামেরা দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হয়। স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসা একাধিক রোগী জানান, হাসপাতালটিতে সেবার দৃশ্যপট পাল্টে দিয়েছেন বর্তমান স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বিশ্বেশ্বর চন্দ্র বর্মন।
তিনি যোগদানের পর থেকে হাসপাতালের খাবার মান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সুবিধা-অসুবিধা, ফুল-ফলাদির বাগানসহ সার্বিক বিষয়ে নানা মুখী সৃজনশীল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। উপজেলার কিসামত ঝিনিয়া এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা শাহাদুল ইসলাম বলেন, এক সময় নিয়মিত চিকিৎসক ও ওষুধ পাওয়া যেত না । এখন পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসক রয়েছেন, আমরাও উন্নত মানের সেবা পাচ্ছি। বিনামূল্যে ওষুধ দিচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক ডা.আজিজ নাদিম বলেন, প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা বিভিন্ন ধরনের রোগীকে আমরা যত্নসহকারে চিকিৎসা সেবা প্রদানসহ বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করছি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক স্বাস্থ্যকর্মী জানান, কিভাবে আরো সহজে প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রাম পর্যায়ে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়েও প্রতিনিয়ত সভা-সমাবেশের মাধ্যমে দিক-নির্দেশনা দেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সৃজনশীল ভাবনা, শৃঙ্খলা ও যুগান্তকারী উদ্যোগের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এদিকে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আউটডোরে ৯৬ হাজার ৯২৪ জন ও হাসপাতালে ভর্তি ১০ হাজার ৫০০ জনকে স্বাস্থ্য সেবা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া মোট ৩১২ জনকে ডেলিভারী করা হয়েছে। এর মধ্যে নরমাল ৩০০ জন ও সিজারিয়ান ডেলিভারী ১২ জন।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রাকিবুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে কনসালটেন্ট ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়ে থাকে। স্বাস্থ্য সেবার মান আরো উন্নত করতে আমাদের এ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে ।
এ ব্যাপারে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.বিশ্বেশ্বর চন্দ্র বর্মন বলেন, রোগীদের উন্নত সেবা প্রদানের জন্য চিকিৎসক-নার্স সকলেই নিরলস ভাবে কাজ করছি,বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে জেনারেটর চালু রাখতে হচ্ছে। তবে সরকারি ভাবে জেনারেটরের তেল বরাদ্দ না থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আশা করি, দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।