ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলাধীন রসুলপুর গ্রামের মৃত রিয়াজত আলী শেখের সর্বকনিষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ময়েজ উদ্দিন; যিনি রসুলপুর চকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিদাতা, প্রতিষ্ঠাতা ও প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক (অবসরপ্রাপ্ত) এবং দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসা রসুলপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। তিনি ১৯৭১ সালে প্রিয় মাতৃভূমিকে স্বাধীন করার জন্য জীবনের মায়া ত্যাগ করে পরিবার-পরিজন ছেড়ে অস্ত্র হাতে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের কারণেই পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা মিলে তাঁর বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল এবং তাঁর পরিবারকেও নানাবিধ নির্যাতনসহ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্ব থেকে অদ্যাবধি স্থানীয় একটি কুচক্রীমহল তিনি ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে; এমনকি তাঁর বসতভিটা সংলগ্ন সাফ কবলা দলিল ও রেকর্ডভূক্ত রসুলপুর মৌজাস্থিত পুরাতন ১৮৯৮ দাগ মোতাবেক নতুন ৩৩০৪ ও ৩৩০৫ দাগের এবং পুরাতন ৩৭৯৬ দাগ অনুযায়ী নতুন ৩৩১০ দাগের জমি বেদখলের অপচেষ্টায় একই গ্রামের মৃত আবুল কালামের পুত্রদ্বয় রফিকুল ইসলাম এবং রাকিবুল ইসলাম ওরফে রিপন গংরা বারবার হত্যাচেষ্টা, নামে-বেনামে মিথ্যা অভিযোগ দাখিল, মিথ্যা মামলা দায়ের এবং পুরাতন ১৯০০ দাগ মোতাবেক নতুন ৩৩০৯ দাগের উপর মনগড়া বিবরণ সম্বলিত একাধিক দলিল সম্পাদনসহ হয়রানীমূলক নানান ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে; যা খুবই উদ্বেগজনক।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ময়েজ উদ্দিনকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে ১০ মে ২০২১ তারিখ তাঁর বসতভিটা সংলগ্ন ৩৩১১ দাগের জমিতে অনধিকার প্রবেশপূর্বক রফিকুল ইসলাম এবং রাকিবুল ইসলাম ওরফে রিপন গংরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে হাড়কাটা রক্তাক্ত জখম করে। এর ফলে তিনি গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটানা ২২ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। ঘটনার দিনই তাঁর দ্বিতীয় ছেলে মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে রফিকুল ইসলাম এবং রাকিবুল ইসলাম ওরফে রিপন গংদের বিরুদ্ধে গফরগাঁও থানার মামলা নং ০৬ তারিখ ১০/০৫/২০২১ দাখিল করেন; যা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। উপজেলার প্রায় অর্ধশত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপির প্রেক্ষিতে গফরগাঁও থানা পুলিশ মামলাটির প্রধান আসামি রফিকুল ইসলামকে ১৭ মে ২০২১ তারিখ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে। সুচতুর রফিকুল ইসলাম জামিনে মুক্ত হয়েই আত্মরক্ষার জন্য ২০ মে ২০২১ তারিখ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ময়েজ উদ্দীনসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে গফরগাঁও থানার মামলা নং ০১ তারিখ ০৩/০৬/২০২১ একটি নিছক মিথ্যা ও কাউন্টার মামলা দায়ের করেন; যা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
পরবর্তীতে মৃত আবুল কালামের পুত্র রাকিবুল ইসলাম ওরফে রিপন এবং মৃত এ কে এম আব্দুল আজিজের পুত্র হুমায়ুন কবির ওরফে কামাল গংরা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ময়েজ উদ্দিনের দ্বিতীয় ছেলে মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপত্তিকর ও মানহানীকর স্ট্যাটাস ও কমেন্ট পুনঃপুন পোস্ট করে। একারণে মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে রাকিবুল ইসলাম ওরফে রিপন এবং হুমায়ুন কবির ওরফে কামাল গংদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী সাইবার ট্রাইব্যুনালে সিআর মোকদ্দমা নং-৭৫/২০২২ তারিখ ১২/১০/২০২২ দাখিল করেন; যা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। একই এলাকার মৃত হাফিজ উদ্দিনের পুত্র মোফাজ্জল হোসেন দীর্ঘদিন যাবৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে দেশে-বিদেশে চিকিৎসাসেবা নিয়েছিলেন। তাদের সহোদর ভাই-বোনদের মধ্যে পৈত্রিক জমিজমা নিয়ে একাধিক মামলা-মোকদ্দমা চলমান ছিল। তিনি ১৬ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ দিবাগত রাত ১০:২০ টায় নিজ বাড়িতেই হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন।
কিন্তু রফিকুল ইসলাম, হুমায়ুন কবির ওরফে কামাল এবং রাকিবুল ইসলাম ওরফে রিপন গংদের প্ররোচনায় অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হীন স্বার্থকে চরিতার্থ করার জন্য পরিবারের সদস্যদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মোফাজ্জল হোসেনের লাশ পোস্টমর্টেমের ব্যবস্থা করিয়ে মৃতের ছোট ভাই নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে তাদেরই বড় ভাই তোফাজ্জল হোসেনকে প্রধান আসামি করে আদালতে একটি মিথ্যা সিআর মোকদ্দমা ৪৪৮/২০২৩ তারিখ ২০/১১/২০২৩ দায়ের করেন, যাতে একই পরিবারের লোক হিসেবে উল্লেখ করে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ময়েজ উদ্দীনসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামও ব্যবহার করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ফরেনসিক রিপোর্ট এবং পুলিশ রিপোর্টৈ মোফাজ্জল হোসেনের স্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। পূর্ব শত্রুতা ও বিরোধের জেরেই যে মিথ্যা সিআর মোকদ্দমাটি দাখিল হয়েছিল তাও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
স্বার্থান্বেষী কুচক্রীমহলটি একের পর এক ষড়যন্ত্র করেও ক্ষান্ত না হয়ে যথাযথভাবে যাচাই-বাছাইপূর্বক রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত গেজেট ও সনদধারী প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ময়েজ উদ্দিন এর “বীর মুক্তিযোদ্ধা” উপাধিকে অযৌক্তিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই নামে-বেনামে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দাখিলসহ বিভিন্ন ধরণের অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করছে। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে এবং বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে কথা বলে জানা যায় রসুলপুরের মৃত রিয়াজত আলী শেখের পুত্র মোঃ ময়েজ উদ্দিন রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত একজন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাই জমিজমা নিয়ে একাধিক মামলা-মোকদ্দমা চলমান থাকায় পূর্ব শত্রুতার জেরে কুচক্রীমহল কর্তৃক তাঁর বিরুদ্ধে যেকোনো প্রকার অভিযোগ দাখিল খুবই দুঃখজনক বলে সবাই মন্তব্য করেন।